বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান পদ থেকে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাকে বহিষ্কার করে নতুন কমিটি গঠন করেছে দলটি।
৪১ সদস্যবিশিষ্ট কল্যাণ পার্টির নতুন কমিটিতে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামছুদ্দিন পারভেজকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ আবু হানিফকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হয়েছে।
এছাড়া কমিটিতে পাঁচজন ভাইস চেয়ারম্যান, একজন অতিরিক্ত মহাসচিব, আটজন যুগ্ম মহাসচিব, ছয়জন সহকারী মহাসচিব ও ১৯ জন সদস্য করা হয়েছে। তারা বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে রাজপথে থাকবে।
গতকাল রোববার (১০ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দলের নির্বাহী কমিটির অধিকাংশের মতামতকে তোয়াক্কা না করে অফিস নোটিশ ব্যতীত যুক্তফ্রন্ট নামে নির্বাচনী জোটে যোগদান করায় দলের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মো. ইবরাহিম বীর প্রতীককে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া দলের নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সমন্বয়ে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।
‘পরবর্তী সময় পুনর্গঠিত নির্বাহী কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে দলীয় নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শকে উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত লোভ ও স্বার্থসিদ্ধির জন্য যুক্তফ্রন্ট গঠন করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পার্টির সাবেক চেয়ারম্যানকে প্ররোচিত করায়’ পার্টির সাবেক মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন এবং সাবেক অতিরিক্ত মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিবকেও পার্টি থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কারের বিষয়ে সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে পদক্ষেপ নিলে ভালো। তারা ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে থাকলে কোনো সমস্যা নেই। তবে কল্যাণ পার্টি নামটি ব্যবহারের আগে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারিকৃত বিধিমালা সম্পর্কে যেন তারা সবাই অবগত থাকেন।
কল্যাণ পার্টির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামছুদ্দিন পারভেজ বলেন, আমরা দলীয় বিধিমালা অনুসরণ করে সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমকে বহিষ্কার করেছি। তিনি দলের অধিকাংশ সদস্যের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা ছাড়াই আমাদের এতদিনের আন্দোলন-সংগ্রামকে কালিমালিপ্ত করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা অধিকাংশ সদস্য মানতে পারেননি। আমরা তার মতো জাতীয় বেঈমান হতে চাই না। তাই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে চলমান আন্দোলন বেগবান করতে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে থাকবো।
তিনি আরও বলেন, নির্বাহী কমিটির অধিকাংশের মতামতকে তোয়াক্কা না করে অফিস নোটিশ ছাড়াই ১৩১ জনের নির্বাহী কমিটির গোপন বৈঠকে বাংলাদেশের মানুষের চিন্তা-চেতনার বিপরীতে দলীয় আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দিতে কথিত যুক্তফ্রন্ট-নামীয় নির্বাচনী জোটে যোগদান করায় নির্বাহী কমিটির দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য কল্যাণ পার্টির গঠনতন্ত্রের অনুযায়ী সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমকে সকল পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে কল্যাণ পার্টির সদস্যদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, জেনারেল ইবরাহিম জাতির সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। কিন্তু তার দলের অন্য সদস্যরা বিবেকবান, দেশপ্রেমিক। তাদের এই সিদ্ধান্তকে আমরা ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে স্বাগত জানাই।
পাঠকের মতামত